সুনামগঞ্জ , বুধবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫ , ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
এখনো সার্ভে শেষ হয়নি, গঠিত হয়নি পিআইসি নির্বাচনে পুলিশ শতভাগ নিরপেক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করবে : পুলিশ সুপার ভাটির জনপদের উন্নয়নে নিজেকে উৎসর্গ করব : তোফায়েল আহমেদ খান জেলা পুলিশের মাসিক কল্যাণ সভা অনুষ্ঠিত মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযানে নামছে পুলিশ ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আশিক নূর গ্রেফতার ধোপাজানের বালু লুটে নতুন কৌশল! খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল ও দুঃস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তাহিরপুরে বহালের দাবিতে স্মারকলিপি হাওরাঞ্চলের কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে নতুনপাড়ায় গৃহকর্মীর বিরুদ্ধে বাসার মালিকের স্ত্রীকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ গণঅভ্যুত্থানের পর রাষ্ট্রগঠনের সুযোগ আমরা হাতছাড়া করতে চাই না : এনসিপি নেতা মাসুদ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে চিকিৎসকসহ জনবল সংকট খালেদা জিয়ার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাইলেন রাষ্ট্রপতি লন্ডন থেকে প্রেসক্রিপশনে কেউ দেশ চালাতে পারবে না : সাদিক কায়েম কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থানান্তরের প্রতিবাদে তাহিরপুরে মানববন্ধন, কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি কৃষিখাতে মিথেন দূষণের বিস্তার ঝুঁকিতে নিম্ন ভূমির মানুষ গারো সম্প্রদায়ের ওয়ানগালা বা নবান্ন উৎসব খালেদা জিয়ার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে মব তৈরি করা হচ্ছে : মির্জা ফখরুল

সদর হাসপাতালে ৬৫ ভাগ জনবল নেই, কাঙ্খিত সেবা অধরা

  • আপলোড সময় : ২৯-১১-২০২৫ ০২:০৪:১৭ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৯-১১-২০২৫ ০২:১৮:৫৬ পূর্বাহ্ন
সদর হাসপাতালে ৬৫ ভাগ জনবল নেই, কাঙ্খিত সেবা অধরা ছবি: জেলা সদর হাসপাতাল, সুনামগঞ্জ।
শামস শামীম::
জেলার স্বাস্থ্যসেবার সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান 
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালে সরকার নির্ধারিত জনবলের সংখ্যা ৩৯৬ জনএর মধ্যে ২৫৪টি পদই শূন্য রয়েছে, আছেন মাত্র ১৪২ জন
অর্থাৎ মোট জনবলের প্রায় ৬৫ শতাংশই অনুপস্থিত। এই বিশাল শূন্য জনবলের কারণে জেলবাসীর কাঙ্খিত স্বাস্থ্যসেবা মিলছেনা। এই পদগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শূন্য পদ রয়েছে বিশেষজ্ঞ ও সাধারণ চিকিৎসকের। অনেক টেকনোলজিস্টের পদও শূন্য। ফলে হাসপাতালে ‘কাঙ্খিত সেবা’ মিলছে না বলে রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় রোগী একটু জটিল অবস্থা হলেই তাদেরকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হচ্ছে। এটা যেন অনেকটাই ‘রুটিন ওয়ার্ক’। এতে রোগীর চিকিৎসা ব্যয় বাড়ছে কিংবা চিকিৎসা না করিয়েই অনেককে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। সুনামগঞ্জ হাওর অধ্যুষিত জেলা। দরিদ্র মানুষের সংখ্যাই এ জেলায় বেশি। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা ব্যবস্থাও অনেকটা নড়বড়ে। ফলে জীবন বাঁচাতে বিভাগীয় শহরের দিকে চিকিৎসা নেওয়ার প্রবণতা বেশি লক্ষ করা যায়। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। জেলার সর্বোচ্চ হাসপাতালে চিকিৎসা না পাওয়ায় অনেকে বাধ্য হয়ে বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। তবে এগুলোর মানও বিশেষ উন্নত না। ফলে রোগীদের বাধ্য হয়েই পাশের সিলেটে যেতে হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, প্রত্যন্ত হাওর এলাকার হাসপাতাল এটি। বাইরের ডাক্তাররা এসে বেশিদিন থাকেন না। স্থানীয় চিকিৎসকরা না আসলে কাঙ্খিত সেবা দেওয়া সম্ভব না। আমরা প্রতি মাসেই লোকবলের শূন্য পদ পূরণের জন্য স্বাস্থ্য অধিপ্তরকে চিঠি দিচ্ছি।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখানে সিনিয়র কনসালটেন্টের ১১টি পদের মধ্যে সাতজনের পদই শূন্য রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। জুনিয়র কনসালটেন্ট ১২টির মধ্যে ছয়টি শূন্য, অ্যানেস্থেটিস্ট চারটির মধ্যে তিনটি শূন্য, অ্যাসিস্ট্যান্ট সার্জন ১২টির মধ্যে ছয়টি শূন্য রয়েছে। শূন্য রয়েছে- ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসারের চারটির মধ্যে দুটি, মেডিকেল অফিসার ১৭টির মধ্যে ১৩টি, প্যাথলজিস্ট ও রেডিওলজিস্ট একজনের মধ্যে একজন এবং সিনিয়র স্টাফ নার্স ২২৬টির মধ্যে ১৪১টি।
এছাড়া স্টাফ নার্স ১১ জনের মধ্যে আটজন নেই, মিডওয়াইফ ১২ জনের মধ্যে ৯ জন নেই, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ১১ জনের মধ্যে তিনজন নেই, অ্যাসিস্ট্যান্ট নার্স পাঁচজনের মধ্যে কেউ নেই। ১১টি আয়ার পদ থাকলেও এখন কেউ নেই। নয়জন দারোয়ানের পদও শূন্য। এমএলএসএস ২০টির মধ্যে ১৩টিই শূন্য, ক্লিনিং স্টাফ ১৯টির মধ্যে ১৬টিই শূন্য এবং ওয়ার্ডবয় ১১টির মধ্যে ১১টি পদই শূন্য রয়েছে। এভাবে সেবা সংশ্লিষ্ট জরুরি পদগুলোসহ প্রশাসনিক পদও শূন্য রয়েছে।
ভুক্তভোগী রোগী, তাদের স্বজন ও সচেতন নাগরিকরা বলেন, হৃদরোগ, মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ বা দুর্ঘটনায় জটিল আঘাতপ্রাপ্তরা প্রথমেই সদর হাসপাতালে আসেন। কিন্তু সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় তাৎক্ষণিক সিলেটে স্থানান্তর করে দেওয়া হয়। এতে পথেই অনেক রোগী মারা যাচ্ছেন। যদি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এখানে নিয়মিত থাকতেন তাহলে অনেককে হয়তো বাঁচানো সম্ভব হতো।

সদর উপজেলার সদরগড় গ্রামের দিনা বেগম (৫০) অক্টোবর মাসে হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের নারী ওয়ার্ডে ১৭ নম্বর বিছানায় চিকিৎসাধীন ছিলেন। তিনি বলেন, হাসপাতালে গেছি ভালা ডাক্তরের চিকিৎসার লাগি। গিয়া শুনি বড়ো ডাক্তার নাই। নার্সরা কইছইন বড় ডাক্তর (বিশেষজ্ঞ) হাসপাতালে নাই।

একই ওয়ার্ডের ১৬ নম্বর বেডে সেসময় চিকিৎসাধীন সদর উপজেলার বনগাঁও গ্রামের আজিমুন নেসা বলেন, আমি গরিব মানুষ। পরতি মাসে আসপাতালে ভর্তি অউয়া লাগে। ইবার আওয়ার পর ভালা চিকিৎসা পাইছি না। ওষুধ বাইর থাইক্যা কিনছি। খাওনও ভালা না। আসপাতালো আইলেও ভালা চিকিৎসা পাই না।

প্রায় একই কথা বলেন সদর উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের আমিরুল হক। তিনি বলেন, হাসপাতালে একটু বড় অসুখ নিয়ে আসলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পাই না। অ্যাক্সিডেন্ট, হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের রোগীদের নিয়ে আসলে সিলেটে রেফার করে দেয়। যারা কর্তব্যরত আছেন তারাও এসব রোগীদের ধরেন না। এ কারণে রেফার করা রোগী পথেই মারা যায়।

সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা ইনডোর ও আউটডোরে কাঙ্খিত সেবা দিচ্ছি। তবে চিকিৎসক, নার্সসহ অন্যান্য জরুরি কিছু পদে লোকবলের অভাবে কাঙ্খিত সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। প্রতিদিনই আমরা আউটডোর ও ইনডোরের রোগীরা যাতে সেবা পান নজরদারি করি।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স
এখনো সার্ভে শেষ হয়নি, গঠিত হয়নি পিআইসি

এখনো সার্ভে শেষ হয়নি, গঠিত হয়নি পিআইসি